Clever Learner

freelancing marketplace clever learner

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস শাইন করতে কী কী শিখবেন?

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস

 

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সাফল্য অর্জন করতে চান? স্কিল ডেভেলপমেন্ট, Self-মার্কেটিং, Time Management, Finance Management, Commercial স্কিল, ক্লায়েন্ট সার্ভিস, নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা, এবং কমিউনিকেশনের স্কিল শিখুন। সেলফ-মার্কেটিংএ আপনার স্কিল এবং অভিজ্ঞতা্গুলো সোশাল মিডিয়া এবং ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে দেখাতে হবে।

freelancing marketplace clever learner

টাইম ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে একাধিক প্রজেক্টে কাজ করা এবং ক্লায়েন্ট এর সাথে কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে আয় এবং ব্যয়ের ট্র্যাকিং নিশ্চিত করে। কমার্শিয়াল স্কিল নেগোশিয়েশন এবং প্রোপোজাল লেখার জন্য সাহায্য করে। ভালো ক্লায়েন্ট সার্ভিস দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক এবং কানেকশনের উন্নতি করে। যেকোনো সমস্যা সমাধানের স্কিল গুণগতভাবে সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয়। নতুন জিনিস শেখার ইচ্ছা ফ্রিল্যান্স মার্কেটের টিকে থাকার জন্য আপনাকে সাহায্য করবে। এইসব সফট স্কিল শিখে ফ্রিল্যান্সিং এ এগিয়ে থাকুন।

ফ্রিল্যান্সিং একটি ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় সেক্টর, যেখানে আপনি আপনার স্কিল এবং অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করতে পারেন। তবে, ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে প্রতিযোগিতা বেশ তীব্র, তাই আপনার যদি সফল হতে হয় তবে টেকনিকাল স্কিলের পাশাপাশি আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সফট স্কিল শিখতে হবে।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা আলোচনা করব যে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে শাইন করার জন্য আপনার কী কী সফট স্কিল শেখা উচিত।

১. আপনার স্কিল ডেভেলপ করা

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার জন্য আপনার প্রথম এবং প্রধান কাজ হল যেকোনো একটি স্কিলে এক্সপার্ট হওয়া। যেমন, আপনি যদি একজন ওয়েব ডেভেলপার হন, তাহলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত সবকিছু জানা, নতুন ট্রেন্ডগুলো নিয়ে ধারনা রাখা, নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে জেনে রাখা ইত্যাদি। কিংবা আপনি যদি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হন, তাহলে আপনার ডিজাইন স্কিল উন্নত করার জন্য প্র্যাক্টিস করা, নতুন ডিজাইন এবং ট্রেন্ড নিয়ে গবেষণা করা ইত্যাদি। আপনি যেই সেক্টরেই দক্ষ হোন না কেনো, ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ঐসব স্কিলে এক্সপার্ট হতে হবে, টেকনোলজি এবং ট্রেন্ড নিয়ে ধারনা রাখতে হবে। কোনো স্কিলে পারদর্শী হতে হলে বিভিন্ন মাধ্যমে তা করা সম্ভব। কিভাবে যেকোনো স্কিলে পারদর্শী হবেন তা নিয়ে একটি ব্লগ আমাদের ওয়েব সাইটের ব্লগ সেকশনে পাবেন।

২. একটি পোর্টফোলিও তৈরি করা

আপনার স্কিলগুলো প্রদর্শন করার জন্য নিজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পোর্টফোলিওতে আপনার কাজের স্যাম্পল এবং বর্ণনা থাকবে। আপনি যদি একজন কনটেন্ট রাইটার হন, তাহলে আপনার পোর্টফোলিওতে আপনার লেখা বিভিন্ন ধরণের লিখা, ব্লগ পোস্ট এবং অন্যান্য কাজ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। আপনি যদি একজন ওয়েব ডেভেলপার হন, তাহলে আপনার পোর্টফোলিওতে আপনি যে ওয়েবসাইটগুলি তৈরি করেছেন তার লিঙ্ক রাখতে করতে পারেন। একটি পোর্টফোলিও আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরে। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি কতটুকু পারদর্শী তা আপনার পোর্টফোলিওই ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। প্রতিটি ফ্রিল্যান্সারের উচিত নিজের একটি পোর্টফোলিও বানিয়ে রাখা। পোর্টফোলিও শেয়ারের মাধ্যমে অতি সহজে আপনি আপনার স্কিলগুলো যেকারোর সাথে শেয়ার করতে পারবেন।

৩. একটি প্রোফেশনাল প্রোফাইল তৈরি করা

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে আপনার প্রোফেশনাল প্রোফাইল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার প্রোফাইলটি সম্পূর্ণ এবং আপ-টু-ডেট রাখতে হবে। আপনার প্রোফাইলে আপনার স্কিল, অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য থাকবে। প্রোফাইলটিকে অবশ্যই আপনার প্রোফেশনাল করে তুলতে হবে। একটি সম্পূর্ন প্রোফাইল, ক্লায়েন্টের কাছে আপনার একটি ভালো ইম্প্রেশন গড়তে সহযোগিতা করবে এবং আপনি কাজটি করতে কতটুকু স্কিল্পফুল তাও জানাবে। একটি অসম্পূর্ণ প্রোফাইল আপনার প্রোফেশনালিজমের জন্য ক্ষতিকারক এবং তা নিয়ে ক্লায়েন্টের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করতে পারে। একটি প্রোফেশনাল প্রোফাইল ছাড়া কাজ পাওয়া খুবই কঠিন।

৪. ক্লায়েন্টদের সাথে কমিউনিকেট করা

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার জন্য ক্লায়েন্টদের সাথে ভালোভাবে কমিউনিকেট করতে পারা গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিকেশনের মাধ্যমে যেকোনো প্রজেক্ট থেকে আপনার প্রত্যাশা এবং ক্লায়েন্টের কি কি চাহিদা আছে তা জানা যায়। ঠিকমতো কমিউনিকেশন না করতে পারলে ভবিষতে প্রজেক্ট ডেলিভারির সময় অনেক ঝামেলা এড়ানো যায়। এসব ঝামেলা এবং ঘাটতি একজন ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টের সম্পর্কে ক্ষতির কারন হতে পারে। তাই একটি প্রজেক্ট সম্পর্কে সম্পূর্ন জানা, প্রজেক্ট টাইমলাইন, প্রজেক্টের নতুন কোনো আপডেট বা সাজেশন গুলো নিয়ে ক্লায়েন্টের সাথে নিয়মিত কমিউনিকেশন করা জরুরী। এর মাধ্যমে আপনি আপনার ক্লায়েন্টদের প্রয়োজনীয়তাগুলি বুঝতে এবং তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন।

৫. সেলফ মার্কেটিং

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে সেলফ মার্কেটিং করতে হবে। আপনার স্কিল এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। আপনি সোশ্যাল মিডিয়া, ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলো ইত্যাদি জায়গায় নিজেকে প্রকাশ করতে হবে, আপনার কাজ সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। সেলফ মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মানুষ জানবে যা আপনাকে নতুন কাজ পেতে সাহায্য করবে। এবং প্রতিটি কাজের বা কোনো প্রজেক্টের সফল সমাপ্তি আপনাকে নতুন নতুন এচিভমেন্ট এনে দিবে। ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হতে হলে সেলফ মার্কেটিং খুবই জরুরী একটি বিষয়। সেলফ মার্কেটিং নিয়ে চিন্তিত না হয়ে, নিজের ক্যারিয়ার গ্রোথের জন্য শুরু করতে হবে।

৬. টাইম ম্যানেজমেন্ট

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার জন্য আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল দৃঢ় করতে হবে। একই সময়ে আপনাকে একাধিক প্রজেক্টে কাজ করতে হতে পারে এবং একই সাথে ক্লায়েন্টদের সাথে কমিউনিকেশন করতে হতে পারে। এসব বিষয় সঠিকভাবে ম্যানেজ করতে হলে টাইম ম্যানেজমেন্ট অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিটি কাজের জন্য পরিমিত সময় বের করা, প্রজেক্টের অগ্রগতি এবং প্ল্যান সঠিকভাবে ঠিক করা ইত্যাদি বিষয়ের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্টে পারদর্শীতা থাকা জরুরী। তাছাড়া আপনার কাজের সময় এবং পার্সোনাল সময় আলাদা করতে পারাটাও গুরুত্বপূর্ন। আপনার সময়কে কীভাবে কাজে লাগাবেন এবং কিভাবে কাজ করলে ডেডলাইন মিস করবেন না সে সম্পর্কে প্ল্যান করা গুরুত্বপূর্ণ। নতুবা এসব বিষয় আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে।

৭. ফিল্যান্স ম্যানেজমেন্ট

ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, আপনাকে আপনার ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখতে হবে। আপনার ইনকামের ট্র্যাক রাখতে হবে। এসব বিষয়ে অপারগ হলে আপনার ফ্রিল্যান্স ক্যারিয়ারে উন্নতি অনেকটাই সময়সাপেক্ষ হবে। তাই যেসব কাজ করছেন এবং প্রজেক্টে আছেন সেসব থেকে আয় এবং ব্যয় সঠিক ভাবে না করতে পারলে লং টার্মে ফ্রিল্যান্সিং থেকে বড় কিছু পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই সেলফ ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আয়ত্তে আনা উচিত।

৮. কমার্শিয়াল স্কিল

ফ্রিল্যান্সিং শুধুমাত্র আপনার টেকনিকাল স্কিল সম্পর্কে নয়, আপনার কমার্শিয়াল স্কিল সম্পর্কেও দৃঢ় ধারনা তৈরি করে। আপনি কীভাবে ক্লায়েন্টদের সাথে নেগোশিয়েশন করবেন, প্রপোজাল তৈরি করবেন এবং লিখবেন তা জানতে হবে। এসব সফটস্কিল গুলো শুরু ফ্রিল্যান্সিং এই নয় বরং আপনার ডেইলি লাইফেও কাজে লাগবে। এবং আপনার ক্যারিয়ারের জন্য এসব স্কিল জানা অনেক জরুরী, সেটা ফ্রিল্যান্সিং ই হোক বা রেগুলার কোনো জব।

৯. ক্লায়েন্ট সার্ভিস

ফ্রিল্যান্স হিসাবে, আপনি আপনার নিজের ক্লায়েন্ট সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ। আপনার ক্লায়েন্টদের সাথে প্রফেশনাল এবং বুঝেশুনে আচরণ করতে হবে এবং কথা বলতে হবে। ক্লায়েন্ট এবং আপনার মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা আবার আপনাকে কাজ দেয় এবং আপনাকে অন্যদের কাছে রেকমেন্ড করে। একজন ক্লায়েন্টের কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে পারা ফ্রিল্যান্স ক্যারিয়ারের উন্নতি করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিটি ক্লায়েন্টই একজন ফ্রিল্যান্সারের কাজে সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করা, প্রেজেন্ট করা, ডেলিভার করা, ফিডব্যাকের উপর কাজ করা ইত্যাদি বিষয় ভালোভাবে শেষ করতে হবে। ক্লায়েন্ট সার্ভিস ব্যাপারটিও আপনার ফ্রিল্যান্স এবং রেগুলার জবের জন্য দরকারী। 

১০. নিরন্তর নতুন কিছু শেখা

ফ্রিল্যান্স জগতে সফল হতে চাইলে আপনাকে নিরন্তরভাবে নতুন কিছু শেখার মনোভাব থাকতে হবে। আপনার স্কিল উন্নত করতে এবং নতুন জিনিস শিখতে সর্বদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই আপনাকে আপডেট থাকতে হবে যাতে আপনি প্রতিযোগিতার এগিয়ে থাকতে পারেন। নতুবা খুব অল্প দিনেই আপনি নিজেকে অনেক পেছনে ফেলে দিবেন এবং ক্যারিয়ার গ্রোথ কমে যাবে। এই সফট স্কিল না থাকার কারণে প্রতিনিয়ত নতুন ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং এ অনিহা চলে আসে এবং তারা এই ক্যারিয়ার ছেড়ে দেয়।

এই দশটি সফট স্কিল শেখা আপনাকে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে সফল হতে সাহায্য করবে। তবে মনে রাখবেন, সফলতা এক রাতে আসে না। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং নিরন্তর শেখার মাধ্যমেই আপনি ফ্রিল্যান্স জগতে নিজের জায়গা তৈরি করতে পারবেন।

Clever Learner

Clever Learner

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Post Categoreis